তারিক বিন জিয়াদ: ইউরোপের স্পেন বিজয়ী মুসলিম সেনাপতি

 



ইউরোপের স্পেন বিজয়ী তারিক বিন জিয়াদকে ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কমান্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।  কথিত আছে তিনি স্বপ্নে মহানবী (সা:) কে দেখেছিলেন যিনি বলছিলেন: “হে তারিক সাহস কর! এবং আপনি যা করতে যাচ্ছেন তা সম্পাদন করুন। অতপর তিনি দেখতে পেলেন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এবং

তাঁর সঙ্গীরা আন্দালুসে প্রবেশ করছেন। তারিক একটি হাসি দিয়ে জেগে উঠল, এবং সেই মুহুর্ত থেকে তিনি কখনই তার বিজয় নিয়ে সন্দেহ করেননি। তার অদম্য সাহসিকতায় স্পেন ও ইউরোপ বিজয়ের মাধ্যমে সেখানে মুসলিম শাষণের দ্বার উম্মেচন হয়।  জিব্রাল্টার প্রণালী ও যুক্তরাজ্যের জিব্রাল্টার দ্বীপের নাম আরবি জাবালে তারিক থেকে এসেছে যার অর্থ তারিকের পাহাড়। 

আমার প্রিয় ভাইয়েরা, আমরা এখানে আল্লাহর বার্তা ছড়িয়ে দিতে এসেছি। এখন, শত্রু আপনার সামনে এবং সমুদ্র পিছনে। আপনি তার উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করেন। হয় আপনি বিজয়ী হবেন অথবা শহীদ হবেন। তৃতীয় কোন পছন্দ নেই। পালানোর সব উপায় ধ্বংস হয়ে গেছে, ”যুদ্ধ শুরুর আগে এই কথাগুলো বলে  তার বাহিনীকে বজ্রধ্বনি করলেন। ধার্মিকতার পাশাপাশি বীরত্বের কাজ অনুসরণ করে ইসলামের বিজয় নিশ্চিত করলেন। 

পরাজিত স্প্যানিশ সেনাবাহিনী পরে টলেডোর দিকে পিছু হটে। তারিক বিন জিয়াদ তার সৈন্যদের চারটি রেজিমেন্টে ভাগ করেছিলেন। একটি রেজিমেন্ট কর্ডোবার দিকে অগ্রসর হয়। দ্বিতীয়টি মুরসিয়া এবং তৃতীয় সারাগোসার দিকে অগ্রসর হয়। তারিক নিজেই দ্রুত টলেডোর দিকে এগিয়ে গেলেন। শহরটি প্রতিরোধ ছাড়াই আত্মসমর্পণ করে এবং স্পেনের রাজা রডেরিকের শাসনের অবসান ঘটে।

দুর্দান্ত বিজয়ের কথা শুনে, কমান্ডার মুসা বিন নুসাইর প্রায় ১৮ হাজারের বাহিনী নিয়ে স্পেনে ছুটে যান। দুই জেনারেল ইবেরিয়ান উপদ্বীপের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি জায়গা দখল করে। ধারাবাহিক ভাবে  সারাগোসা, বার্সেলোনা এবং পর্তুগাল একের পর এক বিজয়ী হয় তারা। পরবর্তীতে পিরেনিস অতিক্রম করা হয় এবং ফ্রান্সের লিওন দখল করা হয়। ইউরোপের বেশ কিছু অঞ্চলে ৭১১ থেকে ১৪৯২ সাল পর্যন্ত ৭৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুসলিম শাসনের অধীনে ছিল। তার দ্রুত সাফল্য বাস্তবায়ন তথা তারেকের স্পেন অভিযান বিশ্বের মধ্যযুগীয় সামরিক ইতিহাসে একটি অনন্য স্থান অধিকার করে।

ইউরোপে মুসলিম শাসন স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য  বড় আশীর্বাদ ছিল।  

Theme images by duncan1890. Powered by Blogger.