মদিনার মসজিদে নববীতে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর রওজা মোবারক।
পবিত্র ভূমি মদিনায় মসজিদে নববীর রওজায় চির নিদ্রায় শায়িত আছেন শেষ নবি হযরত মুহম্মদ সাল্লেল্লাহু সাল্লাম। নবীজি যে ঘরটিতে তার স্ত্রী হযরত আয়েশা রাদেয়াল্লা আনহুকে নিয়ে বাস করতেন, সে ঘরটিতে মৃত্যুর পর তাকে দাফন করা হয়। অর্থ্যাৎ, তিনি যেখানে মিত্যুবরণ করেছেন, সেখানেই তাকে কবর দেওয়ার ব্যাবস্থ্যা করা হয়।
মসজিদে নববির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ রওজা। এটি মসজিদে নববির দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত।
রাসুল সাল্লেলাহু সাল্লাম রওজার পাশে ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ও দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর কবর রয়েছে। কবর দু'টির পাশে আর একটি কবরের জায়গা খালি রয়েছে যেখানে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এর কবর হবে। এই পুরো স্থানটি সবুজ গম্বুজের নিচে অবস্থিত। ১৮১৭ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদের শাসনামলে এই গম্বুজটি যোগ করা হয় এবং ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে একে সবুজ রং করা হয়। হজ্জ পালনের আগে কিংবা পরে হাজীরা মদিনা শরীফে আসেন।
রওজা এবং কবরের মধ্যে ছোট একটি পার্থক্য রয়েছে। হাদিস অনুযায়ী যেকোনো মানুষের একটি কবর হয়তো জান্নাতের বাগান হবে অথবা জাহান্নামের একটি গর্ত হবে। রওজা শব্দের অর্থ বাগান। নবী এবং তাদের সাহাবীরা জান্নাতে যাবে এটাই স্বাভাবিক। তাই তাদের কবরকে সম্মানার্থে রওজা বলা হয়।
রওজায় অবস্থিত সবুজ গম্বুজটির চতুর্দিকে সুরক্ষিতভাবে বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। রওজায় আগত জিয়ারতকারীদের সরাসরি হযরত মুহাম্মাদ সাল্লেল্লাহু সাল্লামের কামরায় প্রবেশের সুযোগ নেই। রওজায় প্রবেশপথে এক জাতীয় সোনালী গ্রিলে বেষ্টনী দেওয়া। তবে এই বেষ্টনিতে পাশাপাশি তিনটি ছিদ্র রয়েছে। এই ছিদ্রগুলোর মাধ্যমে তাদের রওজা প্রত্যক্ষ করা যায়।
বেষ্টনি ছাড়াও রওজায় কালো পাথরের দেওয়াল দ্বারা আবৃত করা হয়েছে। দেওয়ালটি নির্মাণ করেন ইসলামের ইতিহাসে অন্যতম মহান খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজ। দেওয়ালটির জন্যে রওজার ভিতর ইচ্ছে করলেও কেউ প্রবেশ করতে পারে না।
এছাড়া, রওজার বেশ কয়েক ফুট মাটির নিচ প্রর্যন্ত গলিত সিসা দ্বারা আবদ্ধ করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় অনেক দুষ্কৃতিকারী হযরত মুহাম্মদ সাল্লেল্লাহু সাল্লাম এর মোবারক চুরি করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল। যার ফলে বিখ্যাত সুলতান নূরুউদ্দীন জেনগী গলিত সিসা দিয়ে মাটির গভীর পর্যন্ত আবদ্ধ করেছেন যাতে ভবিষ্যতে কোন কৌশলেই রওজার সন্নিকটে প্রবেশ না করা যায়।
এই রওজা জিয়ারত করার জন্য বিশ্বের নানা প্রান্ত হতে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ছুটে আসেন।