যুদ্ধ কবলিত দেশ আফগানিস্তানে তালেবানদের গোড়াপত্তন হল যেভাবে, কারাবন্দীদের মুক্তি দেওয়ায় তারা আবারও শক্তিশালী।

 



যুদ্ধ কবলিত এক দেশের নাম আফগানিস্তান। ১৮৩৯ সালের প্রথম ইঙ্গ আফগান যুদ্ধে দোস্ত মোহাম্মদ খানের সময় থেকে আজ পর্যন্ত যুদ্ধের অভয়ারণ্য আফগানিস্তান। 


প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে শুরু হওয়া ব্রিটিশদের সাথে দ্বন্দ্বের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং শেষ পর্যন্ত আমেরিকার সাথে নির্ভীকভাবে লড়াই করে যাচ্ছে আফগানিস্তান। 


আফগানিস্তানের শেষ রাজা মোহাম্মদ জাহির সাহা সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে দ্বন্দ্বে জড়ান এবং ১৯৭৩ সালে ইতালিতে নির্বাসিত হন। এরপর রাশিয়ার মদদপুষ্টে গঠিত হয় পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ আফগানিস্তান তথা পিডিপিএ।  


রাশিয়ার মদদপুষ্ট পিডিপি এর বিরোধীরা ছিলেন আফগান মুজাহিদিনরা। পিডিপিকে আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে সমর্থন করত রাশিয়া।  পক্ষান্তরে মুজাহেদিনদের সমর্থন করত যুক্তরাজ্য ,যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। 


পশ্চিমা সহযোগিতা প্রাপ্ত মুজাহিদিনেরা আবার দুই ভাগে বিভক্ত ছিল যাদের মধ্যে একটি গ্রুপ তালেবানদের সমর্থন করত। অন্য গ্রুপ পশ্চিমা মদদপুষ্টে গঠিত নর্দান এলিয়েন্সকে সমর্থন করত। 


দেওবন্দীইসলামি মোলবাদ আদর্শে গঠিত তালেবান ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন ছিল। তবে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাণকেন্দ্রে নাইন ইলিভেন সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানে পশ্চিমা মদদপুষ্ট  নর্দান এলিয়েন্স এবং ন্যাটো জোট একত্রিত হয়ে যৌথ অভিযানের মাধ্যমে তালেবানে শাসনের অবসান ঘটায়। 


তবে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে দৃঢ় চেতনার অধিকারী তালেবান গোষ্ঠীরা এরপরেও গেরিলা হামলার মাধ্যমে আফগানিস্থানে সশস্ত্র যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছে।  এদের বিরুদ্ধে আল-কায়েদাকে সমর্থন এবং আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ ছিল। 


২০০১ সাল থেকে সুদীর্ঘ ২০ বছর আফগানিস্তানে আমেরিকা সৈন্য মোতায়ন এবং ঘাঁটি স্থাপন করে। তবে  ২০২০ সালে একটি বিশেষ কারণে আমেরিকা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় এবং তালেবানদের সাথে শান্তি আলোচনা করে। কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনাটি এই বছর কার্যকারী হতে চলছে।  


এই শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে ৫০০০ এরও বেশি তালেবান যোদ্ধাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়, যাদের মধ্যে ৪০০ এরও বেশি বন্দী বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডসহ বড় ধরনের অপরাধে যুক্ত ছিল। এরা মুক্তি পেয়ে পুনরায় তালেবানের সাথে যুক্ত হয়। ফলে তালেবান সহজেই তাদের হারানো শক্তি ফিরে পায়। এরই অংশ হিসাবে তালেবান ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের ৩৪ টি প্রদেশের মধ্যে ২০ টি প্রদেশ নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয় যা আফগানিস্তানের ৬৫%। 







Theme images by duncan1890. Powered by Blogger.