উড়োজাহাজের উড়াল রহস্য জানেন কি?
যুগ যুগ ধরে মানুষ আকাশে উড়ে বেড়ানোর স্বপ্ন দেখেছে। বার বার ব্যর্থতার পর অবশেষে রাইট ব্রাদার্স উড়তে সফল হন। আর এখন আমরা হরহামেশাই অতিকায় বিমান আকাশে উড়তে দেখি।এখন অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে কিভাবে এই বিশাল আকৃতির বিমান আকাশে উড়ে। আজ আমরা এই বিষয়েই জানব। কিন্তু প্রথমেই বলে রাখি এ্যারোডাইনামিক্স এতো সহজ কোন বিষয় নয়।এখানে খুব সহজ ভাষায় বিষয়টি তুলে ধরা হবে।
বিমান উড়ানোর সময় ৪ ধরনের বল ক্রিয়াশীল থাকে।
✈ থ্রাস্ট
✈ ড্র্যাগ
✈ ওজন
✈ লিফ্ট
✈ থ্রাস্টঃ বিমানের ডানায় থাকা ইন্জিন ব্যাপক থ্রাস্ট বা ধাক্কা সৃষ্টি করে যা বিমানকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়।
✈ ড্র্যাগঃ বিমান সামনের দিকে এগিয়ে চলার সময় বাতাস বাধার সৃষ্টি করে এবং পেছনের দিকে বল প্রয়োগ করে। এটি ড্র্যাগ ফ্রোর্স।
✈ ওজনঃ পৃথিবীর আকর্ষন এর কারণে বিমান নিচের দিকে ওজন বল লাভ করে।
✈ লিফ্টঃ এই বলই মূলত ওজন বলকে অতিক্রম করে বিমানকে উপরে উঠায়।
এখন প্রশ্ন হলো লিফ্ট বল কিভাবে সৃষ্টি হয়?
✈ ভালো করে খেয়াল করলে দেখবেন বিমানের পাখার উপরের অংশ বাকানো বা কার্ভ করা থাকে
এবং নিচের অংশ মোটামুটি সমতল থাকে।
এখন বাতাস এসে বিমানের পাখায় বাধা পেলে দুটো অংশে বিভক্ত হয়। উপরের অংশ ও নিচের অংশ। এখন পাখার নিচের অংশ মোটামুটি সমতল হওয়ায় বাতাস প্রবাহের জায়গা তেমন একটা কমে না এবং বাতাসের দিকের ও বেগের তেমন পরিবর্তন হয় না। অপরদিকে উপরের অংশ বাকানো হওয়ায় বাতাস প্রবাহিত হওয়ার জায়গা(flow area) কমে যায়। ফলে বাতাস প্রবাহের বেগ বৃদ্ধি পায়(অনেকটা পাইপের মাথা চেপে ধরলে যেমন পানি প্রবাহের বেগ বাড়ে)। এখন ফ্লুইড মেকানিক্স এর নীতি অনুসারে(Bernoulli's principle)ফ্লুইডের বেগ যত বাড়বে চাপ ততই কমবে। ফলে পাখার উপরের অংশে বাতাসের বেগ বেশি হওয়ায় চাপ কম এবং নিচের অংশে বাতাসের বেগ কম হওয়ায় চাপ বেশি হয়ে থাকে। এভাবে নিচে বেশি চাপ ও উপরে কম চাপ হওয়ার কারনে বিমান উপরের দিকে একটি লিফ্ট বল পায়। এভাবে পাখার নিচে ও উপরে প্রেশার ডিফারেন্স তৈরি হওয়ায় বিমান উড়তে সক্ষম হয়।
উল্লেখ্য,Airfoil বিভিন্ন টাইপের হয়ে থাকে। জটিলতা নিরসনের জন্য এখানে একটি Airfoil সহজভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
মোস্তাফিজুর রহমান মুন
৪র্থ বর্ষ
যন্ত্রকৌশল বিভাগ (চুয়েট )