করোনায় SME সংশায় ও বাংলাদেশের বাজেট।
'অর্থনৈতিক উত্তরণ : ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা' শিরোনামে বাংলাদেশের ২০-২১ অর্থবছরে বাজেটের প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে যার পরিমাণ ৫ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা।
বাজেটে ২০ হাজার কোটি টাকার স্টিমুলাস প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, এই ২০ হাজার কোটি টাকার স্টিমুলাস প্যাকেজের মধ্যে SME ( small and medium enterprise) অর্থাৎ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের জি.ডি.পি তে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অবদান ২৫% যা ৭.৮ মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থান যোগাচ্ছে এবং ৩১.২ মিলিয়ন মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছে এই শিল্পে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ৭০-৮০% অকৃষি সেক্টর এবং ৪০% হচ্ছে উৎপাদন সেক্টর। ক্ষু্দ্র ও মাঝারি শিল্পের মধ্যে প্রধানত কৃষি, পোল্ট্রি, ডেইরি, মৎস, পাটজাত দ্রব্য, স্টোর, খাদ্য প্রক্রিয়া, টেইলারিং, ইলেক্ট্রিকাল, লন্ড্রি, মোবাইল রিসার্চ ও MFS দোকান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা, কম্বোডিয়া দেশগুলির জি.ডি.পি তে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অবদান যথাক্রমে ৪০%, ৫২%, ৫৮%। সে তুলনায় বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে। এদিকে COVID-19 সংক্রমণে ঝুকিতে পরেছে এই শিল্প। তাই এই শিল্পের লোকসানের কথা বিবেচনা করে সরকার এই বারের অর্থবছরে ২০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ স্টিমুলাস প্যাকেজ বরাদ্দ দিয়েছে। তবে সঠিক প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন, দুর্নীতি ইত্যাদি বিষয়ে তাগিদ না দিলে সরকারের এই প্রণোদনা খুব একটা কার্যকারী হবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
দির্ঘ দিন ধরে নানা প্রতিকূলতার শিকার এই খাত, এর মধ্যেই করোনা মহামারি শক্ত একটা আঘাত করেছে। দেশের অর্থনীতি ত্বরান্বিত করার জন্য এই খাতের ভূমিকা অপরিহার্য কারণ এর উপরেই বিশাল একটি জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান নির্ভর করে। তাই এই খাত ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনেক প্রতিবন্ধকতার শিকার হবে দেশ। এমনিতেই অবকাঠামোর অভাব, অর্থের অপ্রতুল জোগান, কঠোর নীতি ও বৈষম্যমূলক আচরণ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নকে কঠিন করে দিয়েছে।
করোনা মহামারিতে অনেক বিদেশ থেকে আসা শ্রমিকরা দেশে অবস্থান করছেন যারা ইতিমধ্যেই চাকরি বা শ্রম হারিয়েছেন। মহামারির পর তারা বিদেশে যাবেন কি না, বা যাওয়ার পর চাকরি পাবেন কি না এ নিয়েও তারা শঙ্কিত ও সন্দিহান। অবশ্য যারা বিদেশ থেকে এসেছেন তাদের অনেকেই কিছু একটা মূলধন অর্থাৎ ব্যাংক ব্যালেন্স নিয়ে দেশে এসেছেন। তাই এই অর্থ কিভাবে দেশের মধ্যে কাজে লাগিয়ে সংকোটকে মোকাবেলা করা যায় এ নিয়ে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে পরিকল্পনার অভাব দেখা যাচ্ছে।
করোনা মহামারি সারা বিশ্বকেই অনেক সংশয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। যে কোন মহামারি পর পুরো বিশ্বকে বিশ্ব মান্দার মত সংকোটময় অবস্থা মোকাবেলা করতে হয়। বাংলাদেশও এর বাইরে নয় যেখানে দেশটির সার্বিক অর্থনীতি তৈরি পৌশাক শিল্প ও রেমিটেন্সের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংকটে পরলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দেশের বৃহৎ শিল্পগুলো এবং এর অর্থনীতি।