ঔতিহাসিক নাকবা দিবস: যে দিনটিতে মানবাধিকার হারায় ফিলিস্তিনিরা
১৯৪৮ সালের ১৫ মে ফিলিস্তিনিদের জন্যে একটি দুর্ভাগ্যের নাম। যে দিনটিতে তাদের নিজ ভূখন্ড থেকে বিতাড়িত করা হয় এবং ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করা হয়। সে সময় ফিলিস্তিনের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৯ লাখ। প্রায় সাড়ে সাত লাখের বেশি ফিলিস্তিনি নিজ ভূখন্ড থেকে বিতারিত হয়।
১৫,মে,১৯৪৮-বিশ্বের বুকে গড়ে ওঠা অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী হলেও দিনটিকে প্রতি বছর নাকাবা বা বিপর্যয় দিবস হিসাবে পালন করেন ফিলিস্তিনিরা।
দিনটি উপলক্ষে এই বছর, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাকাবা দিবস ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের মূল অধিবাসীদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও তাদেরকে বিতাড়িত করার দিবস। এই দিনে দখলদার ইহুদিবাদীরা পদ্ধতিগতভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের উপর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন শুরু করে।
অপরাধী ইহুদিবাদীরা এই দিনেই কিছু পশ্চিমা দেশের সহযোগিতায় পবিত্র ফিলিস্তিনি ভূমি জবরদখল শুরু করে এবং মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ীভাবে নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিতিশীলতার বীজ বপন করে যা আজও চলমান রয়েছে।
ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, ৮০% এর কাছাকাছি আরব বাসিন্দা গৃহহীন হয়ে পরে।
অবৈধভাবে রাষ্ট্র তথা ইহুদিদের সামরিক আগ্রাসন, আরব গ্রামগুলিতে হামলা, দেইর ইয়াসিন গণহত্যা সহ ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্গন শুরু করে তারা। এর ফলে ফিলিস্তিনিরা তাদের পিতৃভূমি হারিয়ে বিভিন্ন দেশে শরনার্থী হিসাবে আশ্রয় নেয়।
পরে ইসরায়েলের প্রথম সরকারের জারিকৃত আইনসমূহে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ফেরার বিষয়ে কোন উল্লেখ রাখা হয় নি এবং এই বিষয়ে সরাসরি প্রত্যাখাত করে তারা। যার ফলে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি ও তাদের বংশধররা উদ্বাস্তুই থেকে যায়। বর্তমানে গাঁজা ভূখন্ডে ৮ টি ফিলিস্তিনি শরনার্থী শিবির, পশ্চিম তীরে ১৯ টি শরনার্থী শিবির, সিরিয়ায় ১৩ টি শরণার্থী শিবির, জর্ডানে ১০ শরনার্থী শিবির রয়েছে।
ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতে উদ্বাস্তু ইস্যু তাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফিলিস্তিনি অঞ্চল এবং বিশ্বের নানা অঞ্চলে ১৫ মে, তারিখ নাকবা দিবস হিসেবে স্মরণ করা হয়।
এ বছর নাকবা দিবস উপলক্ষে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে কিছু আরব-মুসলিম দেশের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ফিলিস্তিন ইস্যু মুসলিম বিশ্বের এক নম্বর সমস্যা। এই ইস্যুকে মুছে ফেলার যে চেষ্টা ইহুদিবাদীরা করছে তা ব্যর্থ হবে। বিবৃতিতে ঐক্যবদ্ধ ও সংহতভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য গোটা মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
Source - Parts today Bangla.