মেটাভার্সে স্বপ্নের দুনিয়া: ইন্টারনেটের পরবর্তী অধ্যায়




আপনি কি কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যেতে চান?  

এমন একটি জগৎ থাকবে যেখা‌নে নেই কোন হতাশা, দুঃখ -- শুধু আছে অফুরন্ত আনন্দ!!

হ্যাঁ, প্রযুক্তির কল্যাণে এমন একটি জগৎ এ পাঁ রাখতে যাচ্ছেন যা আপনার কল্পনারও বাইরে।

আপনার কল্পনার চেয়েও অধীক আনন্দময় এই জগতে আপনি মত্ত থাকবেন। এমন একটি পরিবেশ, সেখানে কি নেই?

আপনি চাইলেই  বন্ধুর সাথে আপনার কল্পনার রাজ্যে মিলিত হতে পারবেন, যেখানে দূরত্ব কোন ব্যাপারই নয়।  কোন দেশে আছেন, কোথায় আছেন তাতে কি আসে যায়? বাস্তবতার চেয়েও অধিক প্রাণবন্ত পরিবেশে! এ যেন এক স্বপ্নের রাজ্য!

 আর এই জগৎ এর নাম দেওয়া হয়েছে মেটাভার্স। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ইতিমধ্যেই মেটাভার্সের দিকে ইঙ্গিত দিয়েছে।  এরই মধ্যে তারা তাদের কম্পানির নাম পরিবর্তন করে মেটা ভার্স অফ কর্পোরেশন, সংক্ষেপে মেটা  রাখা হয়েছে। 

বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক নীলস স্টিফেনসন ১৯৯২ সালে তার স্নো ক্রাশ নোবেলে মেটাভার্স নিয়ে প্রথম চিন্তা করে ছিলেন। 

ইন্টারনেটের অগ্রগতির মাধ্যমে আমরা দুরুত্বকে জয় করেছি ঠিকই, তবে এখন দুরুত্বের সাথে মানুষ জয় করতে যাচ্ছে বাস্তবতার মত এক প্রাণবন্ত পরিবেশ। 

অর্থাৎ ইন্টারেনেটের পরবর্তী অধ্যায়ই হল মেটাভার্স। যদিও বিষয়টা প্রাথমিক ধারণা পর্যায়ে আছে, তবে প্রযুক্তির বিকাশে মানুষ একদিন মেটাভার্সে পা রাখবে।

মেটাভার্সের মাধ্যমে হাজার হাজার বছর আগের পরিবেশে ফিরে যাওয়া সম্ভব হবে , সেই পরিবেশে বাস্তবের মত ঘুরে বেড়ানো যাবে এবং আদি মানুষদের সাথে কথা বলাও সম্ভব হবে। 

মেটা ইউনিভার্সের বাস্তবায়িত হলে মানুষের বিনোদন,  শিক্ষাসহ  অনান্য পেক্ষাপট  অচিরেই আমুল পরিবর্তন আসবে।  মেটাভার্স ই -কমার্স, প্রশিক্ষণ ও টেলিমেডিসিনে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। 

মার্ক জুকারবার্গের মতে মেটাভার্সের অনেক উপাদানই আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে মূল ধারার ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হবে।  আর এই উদ্যেশ্যেই ফেসবুক সম্পূর্ণ নতুন প্লাটফর্ম উন্নতি করার কাজ চালাচ্ছে যার নাম হরিজন।

হরিজন এমন এক ভার্চুয়াল দুনিয়া যেখানে সবারই ফেসবুক প্রোফাইলের মত একটি ভার্চুয়াল বাড়ি থাকবে যার নাম হরিজন হোম । আপনি আপনার এই  কাল্পনিক বাসায় বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন আর এই কাল্পনিক বাসায় সবাই মিলে বাস্তবের মত একত্রিত হয়ে গল্প ও আড্ডা দিতে পারবেন।

শুধু ফেসবুকই নয়, মাইক্রোসফট কোম্পানিও তাদের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি উন্নয়নের জন্যে ২০১৭ সালে অ্যাল্টস ভিআর এর সাথে চুক্তি করেছে।  এছাড়া ওপেন এক্সআর, আইইটিজি, ভি-ওরাফ, এক্স-থ্রিডির মতন কোম্পানিগুলো মেটাভার্স উন্নায়নে অনন্য অংশীদার। 

তবে এ ভাবে একটি স্বপ্নের দুনিয়ার আগমন ঘটলে, মানুষ বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জ ও হতাশাকে উপেক্ষা করে অধিক বেশি মগ্ন থাকবে ভার্চুয়াল দুনিয়াতে যা ইন্টারনেট আসক্তি জনিত রোগের কারণ হতে পারে। 

 পাবজি, ফ্রি ফায়ার ও টিকটকের মত ভিডিও গেম ও সোসাল মিডিয়ার প্রতি আসক্তি বেড়ে যেতে পারে আরও ব্যাপকহারে যা বিশ্বের বিভিন্ন যায়গায় সামাজিক ভারসাম্য ও শৃঙ্খলা নষ্টের কারণ হতে পারে।

Theme images by duncan1890. Powered by Blogger.