কপ-২৬: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, বিশ্বের সকল দেশের উদ্যোগ জরুরী

 



বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।  জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিজ্ঞানীরা অতীতে যে প্রভাবগুলো ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তা এখন শুরু হয়েছে।  উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, খড়া ও ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি।  

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। গ্রীন হাউজ গ্যাসের কারণে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে। বিভিন্ন সংস্থার বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে আগামী শতাব্দীতে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা প্রায় ২.৫ থেকে ১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বৃদ্ধি পেতে পারে। 

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এই শতাব্দীতেই পরতে শুরু করেছে এবং সামনের শতাব্দীতে আরো ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করবে। ঋতু পরিবর্তনের কারণে কৃষি কাজে যথেষ্ট ব্যাঘাত হচ্ছে। জলবায়ু উষ্ণ হওয়ার কারণে বিশ্বজুড়ে হারিকেন সম্পর্কিত ঝড়ের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বিংশ শতাব্দীতেই পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রায় ২ ডিগ্রি ফারেনহাইট বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই ডিগ্রি সংখ্যায় ছোট শোনালেও, এইটুকু পরিবর্তনই পৃথিবীর প্রাকৃতিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটাতে সক্ষম। 

বিশ্ব জুড়ে ক্রমবর্ধমান কার্বন নিঃসরণ এর ফলে সংঘটিত জলবায়ু পরিবর্তন যা মানব সভ্যতার জন্য একটি হুমকি স্বরূপ। 

এই হুমকি মোকাবেলা করার জন্য বিশ্বজুড়ে সকল রাষ্ট্রকে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। অবশ্য,  জি-টুয়েন্টি ভুক্ত দেশগুলো ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ আনার জন্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শির্ষ কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোর মধ্যে মতবিরোধের কারণে উদ্যোগটি বিফলে গিয়েছিল। উদ্যোগটি বিফলে যাওয়ার মাত্র একদিন পরেই স্কটিশ শহর গ্লাসগোতে  কপ-২৬ গঠিত হয়। 

গ্লাসকো সম্মেলন মূলত চরম বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রশমনের উদ্দেশ্যে বিশ্বজুড়ে রাষ্ট্রসমূহের সম্মিলিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তাকে ব্যাখ্যা করে। 

তবে বিশ্বের সর্বাধিক কার্বন নিঃসরণকারী দেশ চীন ও তাদের মিত্র রাশিয়া আবহাওয়া পরিবর্তনের ব্যাপারে কোন প্রকার চুক্তি ও সমঝোতা করার ব্যাপারে নেতিবাচক ইঙ্গিত দেওয়ায় আলোচনা ব্যর্থ হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান কার্বন নিঃসরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ৪৮ টি দেশ অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও সমুদ্র পানির উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ভানুয়াতু, মালদ্বীপ ও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের মত দ্বীপরাষ্ট্রগুলো সমুদ্রের পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ডেল্টা অঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রগুলোতে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি ঢুকে পরায় জমি অনুর্বর হচ্ছে এবং এতে কৃষি কাজ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

Theme images by duncan1890. Powered by Blogger.