স্পেনের ক্যানারি দ্বীপে অভিবাসন সংকট: বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রাণহানির সংখ্যা


জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা আইওএম জানায়, পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো হতে প্রায় ৭৮৫ জন মানুষ চলতি বছরের প্রথম আট মাসে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছাতে গিয়ে সাগরে ডুবে মারা যায়৷ বিশেষ করে আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে৷

অনিয়মিত পন্থায় এই রুট পাড়ি দিতে গিয়ে শুধু আগস্টেই মারা যায় প্রায় ৩৭৯ জন৷ এর অর্থ হচ্ছে, গত বছরের প্রথম আটমাসে সাগরে ডুবে প্রাণ হারানো অভিবাসীদের তুলনায় চলতি বছরের আগস্টে বেশি প্রাণহানি হয়েছে বলে জানায় আইওএম। 

ধারণা করা হচ্ছে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে৷  স্পেনের বেসরকারি উন্নয়নসংস্থা ‘ওয়াকিং বর্ডার্স’ মৃতের যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে সেটা অবশ্য আইওএম-এর সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি৷ সংস্থাটি জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয়মাসে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছাতে গিয়ে দু’হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। 

আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে সাগরে ডুবে যাওয়া এক নৌকা থেকে উদ্ধারকৃত সাত অভিবাসীর একজন আইওএমকে জানায়, ‘‘নৌকাটি ডোবার আগেই মানুষ মরতে শুরু করেছিল৷ মৃতদেহগুলো তখন সাগরে ফেলে দেয়া হচ্ছিল যাতে নৌকার ওজন কমে আর আমরা ডুবে না যাই৷’’

উদ্ধারকৃত ঔ অভিবাসী আরো জানায়, ‘‘এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল কিছু মানুষ পাগল হয়ে গেছে৷ তারা একে অপরকে কামড়াচ্ছিল, চিৎকার করছিল এবং সাগরে লাফ দিচ্ছিল৷’’

গতবছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর অনিয়মিত পথে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আগমনের সংখ্যাও বেড়েছে বলে জানিয়েছে আইওএম৷ চলতি বছর ইতোমধ্যে ৯,৩৮৬ জন অভিবাসী দ্বীপটি পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে৷ 

তবে, গত বছরের শেষ চার মাসে প্রায় ২০ হাজার আফ্রিকান অভিবাসী ক্যানারি দ্বীপে পৌঁছায়৷ এই সংখ্যা প্রথম আটমাসের দ্বিগুণেরও বেশি৷ 

উল্লেখ্য, অনিয়মিত পথে আটলান্টিক পাড়ি দেয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ৷ মহাসাগরটির স্রোত অনেক প্রখর, ফলে ভূমধ্যসাগরের তুলনায় এই সাগর পাড়ি দেয়া বেশি বিপজ্জনক৷ তারপরও অভিবাসীরা এই পথে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করছেন৷

Theme images by duncan1890. Powered by Blogger.