বাংলাদেশের ই-কমার্সে কেন অনিয়ম? ই-কমার্স আইন প্রণায়নে দেরি করেছে বাংলাদেশ |

 



একুশ শতকে তথ্যপ্রযুক্তির বিশদ অগ্রগতির ফলে বিশ্বজুড়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। উন্নত বিশ্বের মতো অনলাইনের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশেও গড়ে উঠেছে ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠান।  

সময়ের সাথে বাংলাদেশের জনগণের কাছে দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো জনপ্রিয় হতে থাকে। তবে সাম্প্রতিক ইভ্যালির বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ফলে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের উপর যে বিরুপ ধারণা ধারণা সৃষ্টি হয়েছে, তা দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের উপর জনগণের আস্থা হারাবে।  

এদিকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজান এই বছরে ২৩ ও ২৭ মে বাংলাদেশে ভ্যাট নিবন্ধন করেছে।  বর্তমান সময়ের দেশীয় ই কমার্স সাইট গুলোর সংকটাপন্ন অবস্থার ফলে শীঘ্রই বিদেশী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। 

এদিকে ১৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর  কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন চেয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। এর একদিন পরেই ২০ সেপ্টেম্বর ই-কমার্স তদারকি করার জন্যে ‘ই-কমার্স রেগুলেটরি অথরিটি’ গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। 

বাংলাদেশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল আরো জানায় যে, "যারা এই ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করতে চান তাদের বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সিকিউরিটি মানি রাখা উচিৎ |" তথা ই-কমার্স সংক্লিষ্ট আইন প্রণয়নের কথা ভাবছেন তিনি।  এক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি যদি এ সকল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হন তাহলে তাদের সিকিউরিটি মানি থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। 

তাহলে কি এমন কিছু কার্যকারী আইন প্রণায়নে বাংলাদেশ বেশীই দেরি করে ফেলেছে? এমন কিছু আইন শুরুতেই প্রণীত হলে বাংলাদেশে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারত না। লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতো না। 

উল্লেখ্য ২০০৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথম অনলাইন পেমেন্ট অনুমোদন করেছে। এরপর ২০১৩ সালে অনলাইন পেমেন্ট এর জন্য ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার অনুমোদন দেওয়া হয়। অনলাইন পেমেন্ট অনুমোদন দেয়ার ফলে বাংলাদেশে সহজেই ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের আবির্ভাব ঘটে। এরই ধারায়, ২০১৪ সালে দেশের প্রথম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এখানেই ডট কমের আত্নপ্রকাশ ঘটে।

 ক্যাব এর তথ্য মতে শুধু ফেসবুকেই ৮০০০ ই-কমার্স পৃষ্ঠা রয়েছে যেখানে বছরে প্রায় বিলিয়ন পরিমাণ টাকা লেনদেন হয়। তবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা গৃহীত না হওয়ায় দেশে সৃষ্টি হওয়া এই সকল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো ভোক্তাদের ঠকিয়ে দেওয়া, বিক্রেতা কর্তৃক নিম্নমানের পণ্য প্রদান, টাকা নিয়ে পণ্য না দেওয়া, পণ্য বিক্রির পরেও গ্রাহক কর্তৃক পণ্য গ্রহণ না করা বা ফিরিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায়।

Theme images by duncan1890. Powered by Blogger.