ব্রিটিশ সময়ের ম্যাগনেটিক পিলার সম্পর্কে কি জানা যায়? এর যা যা সত্য আর যা যা সত্য নয়।
আপনি নিশ্চই ব্রিটিশ আমলের ম্যাগনেটিক পিলারের নাম শুনেছেন। কত কথাই না আছে এই পিলারের সম্পর্কে? অনেক মূল্যবান ধাতু, ব্রিটিশরা নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সি অনুযায়ী সারাদেশব্যাপী এ পিলারগুলো পুতে রাখে, আবার অনেকেই বলে থাকে পিলার গুলোর মাধ্যমে ব্রিটিশরা এদেশে তথ্য চুরি করে। অন্য একটি মহল বলে থাকে এ পিলারগুলো বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্রিটিশরা সারা দেশ জুড়ে পুঁতেছিল।
ম্যাগনেটিক পিলার গুলো মূলত হযরত ঈসা নবীর জন্মের প্রায় ৬০০ বছর আগের গ্রিসের আনাতোলিয়ার নামক স্থানে এর সন্ধান মেলে।
তবে কি এ পিলারগুলো ব্রিটিশ শাসকরা বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণের জন্য মাটির নিচে পুঁতে ছিল?
এমন কথা অনেকেই বলে থাকেন, কিন্তু এর উত্তর হবে না।
বজ্রপাতের আর্থিং হিসেবে কাজ করতে পিলারগুলো কোনো ভূমিকা নেই। কারণ এই পিলারগুলো অবস্থান মাটির কয়েক ফুট নিচে যদিও ব্রিটিশ আমলে পিলারগুলোর মাথা দৃশ্যমান ছিল। তবে দৃশ্যমান থাকলও এত ছোট আকৃতির পিলার আর্থিং হিসাবে কাজ করতে পারে না। আর্থিং হিসেবে কাজ করার জন্য পিলারগুলো আরও লম্বা ও বড় হওয়া উচিত ছিল এবং এটি মাটির নিচে আরো গভীরে যাওয়া উচিত ছিল।
তাহলে কি কারণে ব্রিটিশরা দেশজুড়ে এই ধরনের পিলার পুঁতে রেখেছিল?
এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, ব্রিটিশ শাসন ছিল মূলত জমিদার প্রথা। খাজনা আদায়ই ছিল জমিদারদের আয়ের একমাত্র উৎস। তাই জমিদাররা সঠিকভাবে খাজনা আদায় তদাৎরকি করার উদ্যেশে এবং নিখুঁতভাবে ভূমি বন্টন, সীমানা নির্ধারণ, ভূমির জরিপসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুবিধার্থে পিলারগুলো সারা দেশব্যাপী তাদের জমিদারি মৌজায় পুঁতে রাখা হয়েছিল। অনেক বছর ধরে এই পিলারগুলো মাটির সীমানা নির্ধারণে কাজ করবে বলে বিভিন্ন ধাতুর মিশ্রণে তৈরি করা হয় যাতে মরিচিকা না পরে। এছাড়া বিভিন্ন ধাতুর মিশ্রণে পিলারগুলো তৈরি করার ফলে তখনকার সময়ে ধাতুগুলো চুরি করে নিয়ে অন্য কাজেও ব্যাবহার করা অসম্ভব ছিল।
অনেকে আবার বলে থাকে পিলারগুলো নাকি ফ্রিকোয়েন্সি অনুযায়ী পুঁতে রাখা হয়েছিল। মূলত পিলারের সাথে ফ্রিকোয়েন্সির কোনো সম্পর্কই নেই। কথাগুলো যেমন অসামঞ্জস্যপূর্ণ তেমন গুজবও বটে। এছাড়া বর্তমান সময়ে কিছু অসৎ ইউটিউবার শুধুমাত্র ভিউ এবং লাইক এর আশায় এ ধরনের পুরানো সামাজিক গুজব অনলাইনে ছড়িয়ে দিয়ে জন-মানুষে পুনরায় বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে।