রহস্যে ঘেরা মদিনার জ্বীনের পাহাড়: যে রহস্য আজও বিশ্বের অজানা

 



গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে বসে আছেন,  তবুও গাড়ি চলছে উল্টোদিকে। শুধু তাই নয় ধীরে ধীরে গাড়ির গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হচ্ছে।  বিষয়টা অলৌকিক মনে হলেও এমনই একটি স্থান রয়েছে সৌদি আরবের মদিনায়। রহস্যময় ঘেরা এই স্থানটি জিনের পাহাড় নামে খ্যাত। 


মদিনা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত জিনের পাহাড়।  এই এলাকার পাহাড় গুলো খুবই ব্যতিক্রম। অন্য কোন পাহাড়ের সাথে মিল পাওয়া যায় না। পাহাড় গুলো দেখতে অন্যরকম যেখানে ধারালো সূচের ন্যায় ফলা ফলা মাটি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। দেখলে মনে হবে পাহাড় গুলো হয়তো সহজে ভেঙে পড়বে। 


এমন পাহাড় গুলোর মাঝ বরাবর দিয়ে বয়ে গেছে পিচঢালা সড়ক। স্থানটিতে শুধু গাড়িই নয়,  পানির বোতলসহ জুতা এবং যেকোনো জড়বস্তু রেখে দিলে ঢালুর বিপরীতে দিকে চলা শুরু করে। 


স্থানটি হতে এক ধরনের রহস্যময় বাতাসের শো শো আওয়াজ পাওয়া যায় যদিও স্থানটি তেমন কোনো উঁচু অবস্থানে নয়। 


অনেক গবেষকের মতে, স্থানটিতে অতিমাত্রায় চুম্বক জাতীয় পদার্থ আছে বলে এমন হয়। কিন্তু প্রশ্ন দেখা দেয় পানি এবং পানির বোতলসহ অন্যসব জড় পদার্থকে কিভাবে চুম্বক আকর্ষণ করতে পারে?



স্থানটিতে একটি রাস্তা বানানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাস্তাটি ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত সম্পন্ন হওয়ার পরপরই সমস্যা দেখা দেয়।  রাস্তা নির্মাণের জন্য ভারি যন্ত্রপাতিগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে মদীনার দিকে চলতে শুরু করে। এমন অলৌকিক ঘটনা দেখে সেখানকার শ্রমিকরা রাস্তা নির্মাণে ভয় পায় এবং শেষ পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায়।


রহস্যময় ঘেরা স্থানটি এমন রহস্যময় ঘটনার পিছনে এখন পর্যন্ত কোনো যৌক্তিক সমাধান নেই বলে স্থানটিকে ঘিরে রয়েছে অনেক লোককথা। 


আরবের অনেকেই বিশ্বাস করেন, স্থানটি মূলত আরবে মুকাদ্দাস তথা পবিত্র মাটি। এই অঞ্চলের উপর দিয়ে কোন প্লেনও উড়ে যেতে পারে না। 


আরবের লোকেরা বলে থাকেন যে,  পাহাড়টিতে উঠে নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাহু সাল্লাম জ্বিনদের ইসলামের দাওয়াত দিয়েছিলেন। তখন কিছু দুষ্ট জ্বিন দুষ্টামি করে পালিয়ে যাচ্ছিল বলে বয়স্করা তাদের পালিয়ে যাওয়া রোধ করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে তাদের পথ উল্টে দেয় এবং তখন থেকেই স্থানটিতে সবকিছু উল্টো পথে চলা শুরু করে। 


যদিও হাদিসে এমন কোন ঘটনার প্রমাণ মেলে না। নবী করিম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম জ্বীনদের ইসলামের দাওয়াত দিয়েছিলেন মক্কায় যা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। কিন্তু মদিনায় জ্বীনদের সঙ্গে এমন ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায় না। 




মদিনার এই অঞ্চলকে ঘিরে রয়েছে বিশ্বজুড়ে অজস্র  মানুষের কৌতুহল। তাই বিশ্বের নানা প্রান্ত হতে মানুষ ছুটে আসে মদিনার এই অঞ্চলে। অনেক মানুষ কৌতূহল-মনে স্থানটিতে আসলেও শেষ পর্যন্ত তাদের অজানা প্রশ্ন অজানাই থেকে যায়। তাদের কৌতুহলী মন অবশেষে কোনো কারণ খুঁজে না পেয়ে অতৃপ্ত মনে বাড়ি ফিরে যায়।

Theme images by duncan1890. Powered by Blogger.